ঢাকার দোহারে বটিয়া এলাকায় পদ্মা নদীর শাখা খালের উপর এলজিইডির অর্থায়নে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে অপরিকল্পিত ভূল নক্সায় নিচু সেতু নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই সামান্য বৃষ্টিতেই ব্রিজের গার্ডারের নিচ পর্যন্ত ছুয়ে গেছে পানি। আর এতেই বন্ধ হয়ে গেছে সব ধরনের নৌযান চলাচল। স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্ষার ভরা মৌসুম বা ছোট-বড় বন্যা হলে এর নিচ দিয়ে বন্ধ হয়ে যাবে সব নৌযান চলাচল।
স্থানীয়রা বলছেন, ঢাকা জেলা দক্ষিণের সব চেয়ে ঐহিত্যবাহি বড় বাজার হল জয়পাড়া বাজার। এখানে প্রতি সপ্তাহে হাট বসে। এছাড়া এখানে রয়েছে বিশাল বাজার। দোহারের জয়পাড়ার এ হাটে ফরিদপুর, শরিয়তপুর, মাদারিপুর, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ নৌপথে জয়পাড়া হাটে গবাদি পশু, বিভিন্ন চাল, ডাল, শরিষা, শাকসব্জিসহ বিভিন্ন পণ্য নৌপথে পরিবহণ করে থাকেন। ভূল নক্সায় বা নিচু সেতুর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলে জয়পাড়া হাট ও বাজারে ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আর নিচু ব্রিজ হলে এসব পণ্য নিয়ে কিছুতেই জয়পাড়া বাজারে আসতে পারবে না।
স্থানীয় বাসিন্দা আওলাদ হোসেন বলেন, ব্রিজ নির্মাণ এ এলাকার মানুষের দাবী, এটা সবাই চায়। কিন্তু ভূল নক্সায় সেতু নির্মাণ কেউই চায় না। এর আগে সেতুটির উচ্চতা বাড়িয়ে সেতু নির্মাণের দাবিতে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্বারকলিপি দিলেও উপজেলা প্রকৌশলী তা মানতে নারাজ। তিনি তখন বলেছিলেন, পানির লেভেল বাড়লেও নৌচলাচলে সমস্যা হবে না।
এরই মধ্যে শেষ হয়েছে ব্রিজটির ৬০ ভাগ কাজ। এখনো কোনো বন্যা হয়নি। সামান্য একটু বৃষ্টির ঢলে ব্রিজ ছুয়ে গেছে পানি। আর এতেই ট্রলারসহ সব ধরনের নৌযান চলতে পারছেনা। এমনকি এর নিচ দিয়ে বড় নৌযান তো দূরের কথা, কষ্ট হবে ডিঙ্গি নৌকা চলাচলেও। নিচু ব্রিজ হওয়ায় হতাশ এ এলাকার সাধারন মানুষ।
জয়পাড়া বাজার বনিক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার মাঝি বলেন, নিচু সেতুর নির্মাণ হলে জয়পাড়া হাট ও বাজারের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সবচেয়ে বেশি। নিচু ব্রিজ হওয়ার ফলে পদ্মার ওপারে জেলাগুলো থেকে পণ্য আসতে সমস্যা হবে। এক সময় জয়পাড়া বাজার তার ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকা বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আইনুল হক জানান, অনুমোদনের ভিত্তিতে নকশা চূড়ান্ত করার বিধান থাকলেও এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. হানিফ মোর্শেদী বলেন, সেতুর দুইপাশের এপ্রোচ সড়কে জায়গা না থাকায় মূল অংশ উচু করা সম্ভব হয়নি। বর্ষা মৌসুমে ১৫দিন কষ্ট হবে। এবং নৌযান চলতে পারবে।
এদিকে সেতু নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের মালিক শেখ সালাউদ্দিন এর সাথে এবিষয়ে জনতে চাইলে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ব্রিজ যেভাবে নির্মিত হোক আমি চাইব ঐতিহ্যবাহী জয়পাড়া হাট-বাজার যাতে কোনো ভাবেই ক্ষতি মুখে না পড়ে। ব্রিজটির উচ্চতা বাড়ানো যায়কিনা এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।