আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে। প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলবে ৪ ঘণ্টা। তবে শিক্ষকদের ৪ ঘণ্টা থাকা বাধ্যতামূলক হলেও শিক্ষার্থীদের তা থাকতে হবে না। সর্বোচ্চ দুটি ক্লাস করেই ঘরে ফিরবেন শিক্ষার্থীরা।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলবে ৪ ঘণ্টা করে। এ সময় শিক্ষক-কর্মচারীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবেন। তবে প্রত্যেক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দুটি করে ক্লাস নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা একই সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসবে না। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীরা আসবে এবং যাবে। যাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করা এবং বের হওয়ার সময় স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব ঠিক থাকে। ’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ‘নির্দেশনা অনুযায়ী রুটিন তৈরি করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে বলবেন শিক্ষকরা এবং রুটিন অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাতে হবে।’
জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘বিদ্যালয় পরিকল্পনায় একটি নীতি তৈরি করবো। সেই নীতি অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো রুটিন তৈরি করবে।’
গত রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান শুরু হবে। খোলার দিন থেকে প্রত্যেক দিন ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসবেন। প্রতিদিন রুটিন অনুযায়ী ক্লাস নেওয়া হবে। এছাড়া অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা রুটিন অনুযায়ী সপ্তাহের একদিন করে বিদ্যালয়ে যাবেন এবং রুটিন অনুযায়ী ক্লাসে অংশ নেবেন।
ওই দিন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘১২ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর প্রথম দিকে ৪ ঘণ্টা চলবে। পর্যায়ক্রমে এই সময় বাড়ানো হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুরোপুরি চলবে। বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত খুলে দিতে উপাচার্যদের সঙ্গে এক সপ্তাহের মধ্যে বৈঠক করা হবে।’
সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাবে না। পঞ্চম শ্রেণির পাঠদানের জন্য শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাবে। অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন করে বিদ্যালয়ে আসবে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে শিক্ষকরা ক্লাস করাবেন।’
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দিকে প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হবে মাত্র তিনটি। বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের শ্রেণি কার্যক্রম চালানো হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘প্রথম দিকে আমরা ক্লাস বেশি নেবো না। হয়ত তিনটি ক্লাস নেবো। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সুপারিশ অনুযায়ী আমরা প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবো বিদ্যালয়গুলোকে।’
প্রসঙ্গত, গত বছর ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হলে ওই বছর ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করে সরকার। দেড় বছরের বেশি সময় পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর। শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত জানা যাবে।