মাও : খালেদ সাইফুল্লাহ একটি নাম, একটি চেতনা একটি ইতিহাস,সাধারণ আলেমদের প্রেরণার উৎস, আলোর বাতিঘর।
আধ্যাত্মিকতার সবক রপ্ত করেছেন শায়খ ইব্রাহিম আফ্রিকীর কাছে। আমীরে শরীয়ত হাফেজ্জী হুজুর রহ.এর একান্ত স্নেহধন্য শিষ্য ও জামাতা, কমলনগরের ওলামায়েকেরামের প্রধান প্রতিনিধি।
শোষণযুগের সফল শাসক, ধর্মপ্রাণ দেশপ্রেমিক মানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গী। সবাইর কাছে ‘পীরসাহেব কমলনগর’ নামেই পরিচিত,কর্মগুণে অনন্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন সর্বমহলে।
বর্তমানে তিনি লক্ষ্মীপুর কমলনগরের ৮নং চরকাদিরা ইউনিয়নের সফল চেয়ারম্যান। আমাদের পাশের ইউনিয়ন হওয়ায় সে সম্পর্কে টুকটাক জানা আছে। তিনি আব্বাজানের সমবয়সী হওয়ায় আব্বাজানের মুখে ও প্রায়ই তাঁর জীবনগল্প শুনি,আপ্লুত হই। অভিভূত হই, তিনি একজন সুবক্তা।
দীনি মাহফিল করে বেড়াচ্ছেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে,তাঁর মাহফিল মানেই খোদাভীতির ক্লাস,প্রতিটি মাহফিলেই তিনি প্রভুর ভয়ে স্বজনহারা মানুষের মত, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীর মত ডুকরে ডুকরে কাঁদতে দেখি।
তিনি চেয়ারম্যানি দায়িত্ব পাওয়ার পরে তাঁর জীবনের নতুন অজানা অধ্যায় মানুষ জানতে পেরেছে। শাসক কেমন হয়? একটি ইউনিয়ন পরিষদ কীভাবে পরিচালনা করবে? এগুলো তিনি বাস্তবে রুপ দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। শোষণ-নিপীড়ন-উৎপীড়নের যুগে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিলেন ‘খলিফা উমরের শাসনামল’ কিছুটা এমনি ছিল।
খলিফা উমর রা. সাড়ে আটলক্ষ বর্গমাইল তথা অর্ধ পৃথিবীর রাজা হয়ে ও রংমহল আর মিছে দুনিয়ার মোহ পরিহার করে ছেঁড়া ডোরাকাটা চাদর পরে মানুষের খোঁজখবর নিয়ে আহার পৌঁছে দিতেন জনগণের দুয়ারে দুয়ারে। ঠিক তেমনি আজ চৌদ্দশ’ বছর পর আমরা পেয়েছি উমর রা. এর প্রতিচ্ছবি। গায়ে ভালো কাপড় নেই। পরণে চকেচকে জামা নেই। দামি গালিচা আর মখমলের গদি নেই। যুগের ‘বি এম ডব্লিউ ‘ বা ‘ফ্রাডো’ গাড়ী নেই। সম্বল আছে ২০০ টাকার কম্বলের গদি। সাধারণ একটি চেয়ার।
চলাচলের জন্য একটি বাইসাইকেল,পরণের কাপড় ধূলামলিন,পায়ের মোজা ছেঁড়াফাটা ৭০/৮০ টাকার একজোড়া স্যান্ডেল প্রায় পায়ে দেখি।
অথচ ইনি আজকের বিলাসীযুগের একজন দাপুটে চেয়ারম্যান,কিছুদিন আগে দেখেছি মানুষের সাথে কাঁধেকাঁধ মিলিয়ে মাটি কেটে জনগণের চলাচলের রাস্তা ভরাট করতে। দেখেছি তক্তা দিয়ে নির্মিত সাঁকো নিজ হাতে তৈরী করতে। চলার পথে কারো মালবাহীগাড়ী আটকে গেলে নিজহাতে ঠেলে দিতে, কি মানুষ পেলাম আমরা। কি চেয়ারম্যান পেলো জনগণ। আপনি হয়ত ভাববেন তাঁর গায়ে জোর আছে।
তিনি টগবগে যুবক আসলে তা নয় তিনি ষাটোর্ধ ধবধবে সাদা দাঁড়িওয়ালা মুরুব্বি,বর্তমানে সারাদেশে নভেল করোনার প্রাদুর্ভাব চলছে। ভাইরাসের ভয়ে যখন মানুষ ঘরকুনো হয়ে পড়ছে।
দিনমজুরের কাজকর্ম যখন থেমে গেছে, তখন মানুষের দুয়ারে খাবারদাবার পৌঁছাতে তিনি ব্যস্ত, অন্যলোক দিয়ে নয়; নিজেই সাধারণ ‘কামলা’। নিজেই চাউল-আলু নিয়ে যাচ্ছেন অসহায় মানুষের দুয়ারে দুয়ারে।