ভয়েস বার্তা ডেস্কঃ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই) বলেন, দেশের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকার কারণেই গণমুখী সংগঠন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ইসির লোক দেখানো সংলাপে অংশগ্রহণ করেনি। দেশের মানুষের আগ্রহের জায়গা হল নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে। বিগত দিনের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা মনে করি দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ আমাদের দেশে নেই।
আজ (শুক্রবার) বিকাল ৩টায় গুলিস্থানস্থ কাজী বশির মিলনায়তনে ইসলামী যুব আন্দোলন আয়োজিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী জমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন এর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী জেনারেল আতিকুর রহমান মুজাহিদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী জমায়েতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারি মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম আতিকুর রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরম্নল করীম আকরাম, ইসলামী যুব আন্দোলনের জয়েন্ট সেক্রেটারি এ আর খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মনসুর আহমদ সাকি প্রমুখ।
শায়খে চরমোনাই আরো বলেন, দেশ প্রতিনিয়তই চরম সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে। মেগা মেগা উন্নয়নের নামে মেগা লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনীতি আজ সংকটাপন্য। তিনি বলেন, দেশের অর্থ লুটপাট, অপচয় ও বিদেশে অর্থ পাচারে দেশের অর্থনীতি মারাত্মক সংকটে। বর্তমানে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের নামে দেশের মানুষের ভোগান্তি আজ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাই আমরা মনে করি শুধু সাশ্রয় নয়; বিদ্যুতের টেকসই উৎপাদন বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্য নিয়ে লুকোচুরি খেলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি দেখাচ্ছে; যার ফলে আজ দেশের এই চরম দুর্দশা।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বর্তমান সরকার ও বিগত দিনের সরকারের সমালোচনা করে বলেন, বিগত দিনের সরকারের আমলে শুনতাম খাম্বা কাহিনী আর বর্তমান সরকারের আমলে শুনি পর্দা ও বালিশ কাহিনী। এভাবে দুর্নীতি করে ক্ষমতাসীন ও তাদের মদদে ১৫ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেশকে দেউলিয়া করতে চাচ্ছে। তাই যেকোনো মূল্যে এই পাচারকারীদের হঠাতে হবে। পাকিস্তানের বর্তমান ক্ষমতাসীনরা যেভাবে বিদেশি শক্তির মদদে ক্ষমতায় বসেছে, বিএনপি সেভাবেই বিদেশী শক্তির মদদে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে চায়। তাই তারা জনগণের কাছে না গিয়ে বিদেশিদের কাছে ঘুরছে। যে ইসি স্থানীয় ছোট ছোট নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে সক্ষম হয়নি। সেই ইসির কাছে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার কোনই ক্ষমতা নেই। তাই ইসলামী আন্দোলন ইসির বৈঠকে শুধুমাত্র সময় অপচয় হিসেবে মনে করে।
শায়খে চরমোনাই রাজনীতিক দলগুলোকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে নুরম্নল হুদা কমিশনের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলি, তাহলেই কোন সিইসি ঐরকম লজ্জাজনক নির্বাচন দিতে সাহস পাবে না। অনির্বাচিত অবৈধ সরকারের বিরম্নদ্ধে কোন সার্থক আন্দোলন তৈরি করতে ব্যর্থ বিএনপিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর পীর সাহেব চরমোনাই’র নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ বলেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ জাতীয় সরকার ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা যায় না। সরকার দুর্নীতি করতে করতে দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। তাই তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে ভয় পায়। জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিকে আরো জোরদার করে তুলতে যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা নেছার উদ্দিন বলেন, জীবনবাজি রেখে লুটেরাদের উৎখাত করে দেশ গঠনের গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা ইসলামী যুব আন্দোলনকে পালন করতে হবে। তাই নিজেদেরকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। সভাপতি তার বক্তব্যে অনতিবিলম্বে সকল কারাবন্দী আলেমদের মুক্তি দাবি করেন।